কাসাভা আটার পুষ্টিমান গমের আটার চেয়ে অনেক বেশি এবং এই আটা থেকে রুটি ছাড়াও অনেক প্রকার সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায় । কাসাভা ভিটামিনের দিক দিয়েও শীর্ষে। কাসাভার খাদ্যমানের মধ্যে প্রেটিন আছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ্যমাইনো আসিড ও কার্বোহাইড্রোট আছে যথাক্রমে ১০ ও ৩০ শতাংশ। আরো আছে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ। এগুলো মিলে সেলুলোজের সঙ্গে পাওয়া যাবে মিনারেল ও ফাইবার গ্লুটামিন বা এর আঠালো অংশ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের অসুখ উপশমের ক্ষেত্রে বন্ধুর মতো কাজ করে। কাসাভা ফাইবার বাড়তি কোলেস্টরলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে। এমনকি এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভুমিকা রাখে।

আফ্রিকা মহাদেশের বেশির ভাগ মানুষ কাসাভা খেয়ে জীবন ধারণ করলেও বাংলাদেশে এখনো এই ফসলটি নিতান্তই অপরিচিত। গুল্মজাতীয় এ উদ্ভিদটি বাংলাদেশে চাষ না হলেও পাহাড়ে-জঙ্গলে দীর্ঘদিন থেকে এ গাছ জন্মায়। স্থানীয়ভাবে কাসাভার ব্যবহার আছে অনেক আগে থেকেই। গ্রামের মানুষ কাসাভার কন্দকে শিমুল আলু বলেই চিনে। গাছটির পাতা অনেকটা শিমুল গাছের মতো দেখতে বলেই হয়তো এরকম নামকরণ।
সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে এই কাসাভা দেশের অর্থনীতিতে রাখতে পারে গুরুত্বপূরণ ভূমিকা। ইতোমধ্যে বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান (যেমন: বে অরগানিকস্) কাসাভা থেকে আটা ও স্টার্চ তৈরি করে তা বাজারজাতকরণের উদ্যোগে নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি সহায়তা পেলে খুব দ্রুত তা বাজারজাত করতে পারবে বলে আশা করা যায়।  কাসাভা আলুকে প্রক্রিয়াজাত করে তা থেকে আটা ও স্টার্চ পাওয়া যায়। এই আটা দিয়ে রুটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাবার পাওয়া সম্ভব। প্রতি কেজি আলু থেকে আটা ও স্টার্চ মিলিয়ে প্রায় ৩৪০ গ্রাম পর্যন্ত উৎপাদ পাওয়া সম্ভব। এক হেক্টর জমি থেকে বছরে প্রায় ২৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টন অর্থাৎ ৩ হাজার ৪০০ কেজি কাসাভা আটা ও স্টার্চ পাওয়া সম্ভব। এই আটা দিয়ে রুটি ছাড়াও পাঁপর, চিপস, নুডলস, ক্র্যাকার্স, বিস্কুট, কেক, পাউরুটি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। কাসাভা আলু যেমন সিদ্ধ করে খাওয়া যায়, তেমনি তরকারি করে মাছ-মাংসের সঙ্গে খাওয়া যায়।
সম্ভাবনাময় কাসাভা থেকে কেবল খাবারই তৈরি হবে তা নয়, এ থেকে তৈরি স্টার্চ ব্যবহৃত হয় শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে। কাসাভা স্টার্চ বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করা স্টার্চের যথার্থ বিকল্প। কাসাভা স্টার্চ টেক্সাটাইল, ওষুধ ও রসায়ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সিমেন্টের গুণগত মানোন্নয়ন, কাগজ, আঠা, প্রসাধন, রাবার ও সাবান শিল্পে ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে স্টার্চ, মল্টোজ, লিকুইড, গ্লুকোজসহ অন্যান্য রূপান্তরিত চিনি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। শুধু তাই সমরাস্ত্র কারখানায় বুলেট ডিটোনেশন কাজে ব্যবহৃত মোমবিহীন চাঁচ- যা আমদানি করতে প্রতি বছর সরকারের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। অথচ কাসাভার স্টার্চ এই কাজেও ব্যবহার করা যায়।
কাসাভার পুষ্টিমান : খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে রয়েছে ৩৭ গ্রাম শর্করা, ১.২ গ্রাম আমিষ, ০.৩ গ্রাম চর্বি, ৩৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ০.০৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৩৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ১৪৬ ক্যালরি খাদ্যশক্তি।
কাসাভার খাদ্যগুণঃ গবেষনাগারে পরীক্ষা করে দেখা গেছে কাসাভা আটার পুষ্টিমান গমের আটার চেয়ে অনেক বেশি এবং এই আটা থেকে রুটি ছাড়াও অনেক প্রকার সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায় । কাসাভা ভিটামিনের দিক দিয়েও শীর্ষে। কাসাভার খাদ্যমানের মধ্যে প্রেটিন আছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ্যমাইনো আসিড ও কার্বোহাইড্রোট আছে যথাক্রমে ১০ ও ৩০ শতাংশ। আরো আছে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ। এগুলো মিলে সেলুলোজের সঙ্গে পাওয়া যাবে মিনারেল ও ফাইবার গ্লুটামিন বা এর আঠালো অংশ ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগীদের অসুখ উপশমের ক্ষেত্রে বন্ধুর মতো কাজ করে। কাসাভা ফাইবার বাড়তি কোলেস্টরলের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে। এমনকি এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভুমিকা রাখে।

তথ্যসূত্রঃ বে অর্গানিকস্ (‘মিট রেসিপি’-র একটি সহযোগী পতিষ্ঠান)